Information

মাঙ্কি পক্স কি? মাঙ্কি পক্স এর ভয়াবহতা

মাঙ্কি পক্স কি? মাঙ্কি পক্স এর ভয়াবহতা

মাঙ্কি পক্স কি? সমগ্র বিশ্ব প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাস এর সাথে লড়াই করে কেবলই নিজেদেরকে গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। ঠিক সেই সময়ে আর এক নতুন ভাইরাস এসে আমাদের সামনে উপস্থিত। যাকে আমরা মাঙ্কি পক্স হিসেবে চিনেছি।

আসুন আজকে জেনে নেওয়া যাক কি এই মাঙ্কি পক্স? এটা কিভাবে ছড়ায়? এর উৎপত্তি কোথা থেকে? এর উপসর্গ কি? এবং এর ভয়াবহতা কি?

মাঙ্কি পক্স 

এটি এক ধরনের ভাইরাস যা মানুষের শরীরে আক্রমণ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে মাঙ্কি পক্স এক বিশেষ ধরনের বসন্ত। আমরা সাধারণত জলবসন্ত বা গুটি বসন্ত এ ধরনের বসন্তই চিনেছি কিন্তু মাঙ্কি এক ধরনের বসন্ত যা ভাইরাসের মাধ্যমে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা পূর্বে যে সকল বসন্ত গুলো চিনেছি যেমন জলবসন্ত এবং গুটিবসন্ত এদের প্রতিকার অতি সহজ, খুব সহজেই আমরা এর থেকে প্রতিকার পেতে পারি। কিন্তু মাঙ্কি পক্স এতটাই বিরল প্রভাব পড়েছে যা থেকে প্রতিকার তো দুরের কথা এর নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসাও বিশেষজ্ঞগণ এখনো উদ্ভাবন করতে পারেনি। আর তাই আমাদের প্রত্যেকেরই মাঙ্কি পক্স সম্পর্কে জানতে হবে এবং এর ভয়াবহতা সম্পর্কেও জানতে হবে আর প্রত্যেককেই সচেতন হতে হবে যাতে করে করোনাভাইরাস এর মত আর নিজেকে গুটিয়ে না রাখতে হয়।

মাঙ্কি পক্স কিভাবে ছড়ায়?

ইতোপূর্বে আমরা জেনেছি মাঙ্কি পক্স কি এখন আমরা জানবো “মাঙ্কি পক্স কিভাবে ছড়ায়?”

Top 10 Foods In The World – 10 Most Popular Foods In The World 2022

মাঙ্কি পক্স করোনাভাইরাস এর মতই এক ধরনের ছোঁয়াচে রোগ। বিশেষজ্ঞগণ ধারণা করছেন এ ভাইরাস বন্যপ্রাণীদের মাধ্যমে বেশি ছড়াতে পারে। বন্যপ্রাণী তথা ইঁদুর যা কিনা আমাদের বসতবাড়িতে খুব সহজেই নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারে এই ইঁদুর এর মাধ্যমে এ ভাইরাস ছড়াতে সক্ষম। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি থাকলে এ ভাইরাস ছড়ানো সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত সকল জিনিসপত্র যেমন পোশাক, ব্যক্তিগত জিনিসপত্র এগুলো অন্যদের থেকে আলাদা করে রাখতে হবে কারণ এর থেকে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়তে পারে এমনটাই ধারণা করছেন সমগ্র বিশ্বের বিশেষজ্ঞগণ।

মাঙ্কি পক্স এর উৎপত্তি

গত মে মাসের ৭ তারিখে মাঙ্কি পক্স প্রথম মানব দেহে আক্রান্ত করে। গত মে মাসের ৭ তারিখে লন্ডনে এক ব্যক্তির শরীরে এ ভাইরাস প্রথম আবিষ্কার করা হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে মাধ্যমে জানা যায় যে, আক্রান্ত ব্যক্তি নাইজেরিয়া থেকে সম্প্রতি লন্ডনে পৌঁছেছিলেন। বিশেষজ্ঞগণ ধারণা করছেন আফ্রিকার কোন দেশে বা কোন এক স্থানে আক্রান্ত ব্যক্তি টি মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির সংস্পর্শে গিয়েছিল যার জন্য তার শরীরে ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়। কিন্তু তার পরবর্তীতে আরও ৬ জন ব্যক্তির শরীরে এই ভাইরাস আবিষ্কার করা হয় ওই ৬ জন ব্যক্তির শরীরে ভাইরাস কিভাবে সংক্রমিত হয়েছে তা বিশেষজ্ঞগণ এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি।

মাংকি পক্স এর উপসর্গ

এখনো পর্যন্ত গবেষকগণ সরাসরি কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারিনি যাতে করে বোঝা যাবে আক্রান্ত ব্যক্তি অন্য কোন বসন্ত বা পক্স এ আক্রান্ত হয়নি। তবে প্রাথমিক কিছু ধারণা পাওয়া যেতে পারে যাতে করে বোঝা যাবে এটি মাঙ্কি পক্স এর উপসর্গ বা এটিই মাঙ্কি পক্স।

চলুন জেনে নেওয়া যাক মাঙ্কি পক্স এর উপসর্গ কি?

মাঙ্কি পক্স কি?

  1. পূর্বে যেমনটি বলছিলাম প্রাথমিক উপসর্গ: প্রাথমিকভাবে বলা যেতে পারে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে জ্বর, মাথা ব্যথা বা মাথা যন্ত্রণা, পিঠ ও গলায় ব্যথার মত অনুভব হওয়া, এবং মাঝে মাঝে শরীরে কাপুনি ও ক্লান্তিও হতে পারে।
  2. আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে বিভিন্ন অংশ যেমন বিভিন্ন লসিকা গ্রন্থি ফুলে উঠতে পারে। এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে বা বিভিন্ন স্থানে ক্ষতচিহ্ন দেখা দিতে পারে। ক্ষতচিহ্ন গুলো প্রধানত মুখমন্ডলে বেশি পরিলক্ষিত হয়। এবং মুখমন্ডলের পরবর্তীতে সারা শরীরেই ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
  3. মাঙ্কি পক্স এর সাথে অন্যান্য কিছু ভাইরাসজনিত অসুস্থতা যেমন হাম, বসন্ত, স্কার্ভি, সিফিলিসের কিছু কিছু লক্ষণ এর সাথে মাঙ্কি পক্সের উপসর্গগুলোর সামান্য কিছু মিল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর তাই অনেকেই মাঙ্কি পক্স এর সাথে অন্যান্য রোগ গুলোর উপসর্গগুলো সামঞ্জস্য করতে গিয়ে অনেক সময় ভুল করে বসেছেন।

মাঙ্কি পক্স এর ভয়াবহতা

  • বিবিসি হতে জরিপ কৃত তথ্য মতে, সমগ্র পৃথিবীতে প্রায় ১২ টি দেশের ৮০ জন ব্যক্তির শরীরে এ ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে।
  • বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের সাথে জুড়ে দিয়ে আরো বলছে, আরো প্রায় ৫০ জন ব্যক্তির শরীরে এ ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে বলে ধারণা করছে।
  • এক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে “এই সংক্রমণ ও স্বাভাবিক কারণ এগুলো এমন দেশে ঘটছে যেগুলো এ ভাইরাসটির স্বাভাবিক আবাসস্থল নয়”।
  • মাঙ্কি পক্স ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে ইতোমধ্যে সংক্রমিত হয়েছে যার মধ্যে অন্যতম যুক্তরাজ্য, স্পেন, পর্তুগাল, জার্মানি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, ইতালি ও সুইডেন।

তবে সব শেষে এটুকু বলা যায় সুস্থির কথা এই যে ভাইরাস সাধারণত মৃদু অসুস্থতার সৃষ্টি করে এবং আক্রান্ত ব্যক্তি কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায়।

Related Articles