দৈনিক দোয়া বা আমল সমূহ
আল্লাহ তাআলা মানুষকে ইবাদত-বন্দেগির জন্য সৃষ্টি করেছেন। মানুষ যখন তার জীবন আল্লাহর হুকুম ও নবী (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক কাটাবে
দৈনিক দোয়া বা আমল সমূহ
আল্লাহ তাআলা মানুষকে ইবাদত-বন্দেগির জন্য সৃষ্টি করেছেন। মানুষ যখন তার জীবন আল্লাহর হুকুম ও নবী (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক কাটাবে— তখন আল্লাহ তাআলা সবকিছু ইবাদতে পরিণত করবেন। আর বিপুল সওয়াবে ভূষিত করবেন।পরকালের মানুষ আল্লাহর রহমত ও আমলের সওয়াবের মুখাপেক্ষি হবে। কেউ কেউ একটু সওয়াব কম থাকায় হাহাকার করবে। তাই এখানে অধিক সওয়াব অর্জন করে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। ফলে যেসব আমলে অধিক সওয়াব লাভ হয়— তা জেনে নেওয়া জরুরি।
দোয়া কবুল হবার প্রধান শর্ত হলো এককভাবে আল্লাহর কাছে চাওয়া এবং তাঁর সাথে কাউকে শরিক না করা। যে ব্যক্তি প্রত্যহ সকাল ও সন্ধ্যায় আল্লাহ্কে বিভিন্ন দোয়ার মাধ্যমে স্মরণ করবে, কোন কিছুই তার ক্ষতি করতে পারবে না।কোরান ও হাদিসের আলোকে দৈনন্দিন দোয়ার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক, মানব জীবনের ইহকালীন ও পরলৌকিক যাবতীয় কল্যাণ এতে বিধৃত হয়েছে। দৈনন্দিন আমলের মধ্যে দোয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। চলুন জেনে নেয়া যাক কোরান ও হাদিসের আলোকে কিছু দোয়ার বিষয়ে। দৈনিক দোয়া বা আমল সমূহ
নগদ ইসলামিক একাউন্ট।নগদ ইসলামিক অ্যাপ
১. ঘুম হইতে জাগিবা মাত্রই পড়িবে:
বাংলায়: (আলহামদু লিল্লা-হিল্লাজী আহ্ইয়ানা বা’দা মা আমা তানা ওয়া-ইলাইহিন্নশুর।
২. পায়খানায় প্রবেশ করিবার আগে এই দোয়া পড়িবেন:
বাংলায়: (আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা মিনাল খুবুছে অ-ল্ খাবায়েছে।)
৩. পায়খানা হইতে বাহির হইয়া পড়িবেন:
বাংলায়: (গোফ্রা- নাকা আলহামদু হিল্লাহিল্লাজি আযহাবা আন্নিল আযা অ আ-ফা- নী।)
৪. সকাল-সন্ধ্যায় এই দোয়াটি পড়া, ” সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি আদাদা খলকিহি, ওয়া রিজাকা নাফসিহি, ওয়া জিনাতা আরশিহি, ওয়া মিদাদা কালিমাতিহ।”
অর্থ : আমি আল্লাহ তাআলার পবিত্রতা ও তার প্রশংসা বর্ণনা করছি, তার সৃষ্টি সংখ্যা পরিমাণ, তার মর্জি অনুযায়ী, তার আরশের ওজন পরিমাণ এবং তার কালামের কালির পরিমাণ।
৫. রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সারাদিনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সময়ে ৩টি আমল করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাহলো-
* আয়াতুল কুরসি, * ৩ কুল এবং * ৩ তাসবিহ। এ আমলগুলো প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর এবং সকাল-সন্ধ্যায় করার কথা বলেছেন বিশ্বনবি।
৬. রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে ৩ বার আসতাগফিরুল্লাহ্ বলতেন। (মুসলিম, ১২২২)
৭. প্রত্যেক ফরয নামাযের পর নিচের দোয়াটি পড়া উত্তম ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারকতা ইয়া যাল-জালা-লী ওয়াল ইকরাম’ (মুসলিম, ১২২১)
৮. সুবহা-নাল্লা-হ (৩৩ বার)। আলহাদুলিল্লাহ্ (৩৩ বার)। আল্লাহু-আকবার (৩৩ বার)।আর ১ বার
(লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহু লা- শারীকা-লাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুওয়া আলা- কুল্লি শাইয়িন ক্বদীর) এগুলো প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে পাঠে গুনাহসমূহ সমুদ্রের ফেনারাশির মতো অসংখ্য হলেও ক্ষমা করে দেয়া হয়।) (মুসলিম, ১২৪০)
৯. আয়াতুল কুরসী (সূরা বাক্বারার আয়াত-২৫৫) ১ বার পড়া। প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়লে তার আর বেহেস্তের মধ্যে মৃত্যু ছাড়া আর কোনো দূরত্ব থাকেনা। (নাসাঈ)
১০) আল্লাহুম্মা আজিরনী মিনান নার’ ৭ বার, ফজর ও মাগরিবের পর যে পড়বে । সে দিন বা সে রাতে তিনি মারা গেলে আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন।
১১. সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস, প্রত্যেকটি ৩ বার করে, ফজর ও মাগরিবের পর পাঠ করা করবেন, রাসূল (সা.) বলেন, সকাল-সন্ধ্যায় এগুলো পাঠ করলে তোমার আর কিছুরই দরকার হবে না।
১২. যে ব্যক্তি প্রতিদিন ফজর ও মাগরিবের পর 10 বার করে দুরুদ শরীফ পাঠ করবে সেই ব্যক্তি কেয়ামতের দিন রাসূল (সা.) এর শাফা’আত লাভ করবে।
১৩. যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় তিনবার করে নিম্নের দোয়াটি পাঠ করবে রাসূলুল্লাহ (সা.) তার হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আল্লাহ উক্ত ব্যক্তিকে সন্তুষ্ট করবেন।
“রাদ্বীতু বিল্লাহি রাব্বা, ওয়াবিল ইসলামি দ্বীনা, ওয়াবি মুহাম্মাদিন নাবিয়্যা’”
১৪. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি দৈনিক ১০০ বার বলে, “সুব্হানাল্লা-হি ওয়াবিহামদিহী” পাঠ করবে তার পাপসমূহ মুছে ফেলা হবে, যদিও তা সাগরের ফেনারাশির সমান হয়ে থাকে। (বুখারী ৭/১৬৮, নং ৬৪০৫; মুসলিম ৪/২০৭১, নং ২৬৯১)
১৫. যে ব্যক্তি প্রতিদিন 10 বার করে সকালে সন্ধ্যায় নিম্নের দোয়াটি করবে তার জন্য 10 জন দাস মুক্তি দেওয়ার সওয়াব লেখা হবে।
” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির।” কোনো বর্ণনায় ‘ইয়ুহয়ি ওয়া ইয়ুমিতু’ শব্দ রয়েছে।
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তার কোনো শরিক নেই, যাবতীয় প্রশংসা তাঁরই, কর্তৃত্ব তাঁরই, তিনিই মহান। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৩৪)
১৬. জাহান্নাম থেকে মুক্তির দোয়া। হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি ফজর ও মাগরিবের পর সাতবার নিম্নের দোয়াটি পাঠ করে এবং ওই দিনে বা রাতে তার মৃত্যু হয় তাহলে সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৭৯)
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আজিরনি মিনান্ নার।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করুন।
১৭. কবরের আযাব হতে মুক্তির দোয়া , যে ব্যাক্তি সকাল-সন্ধ্যায় তিনবার করে নিম্নের দোয়া পড়বো তার কবর আযাব মাফ হয়ে যাবে
“আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিন আযাবিল কাবুর”
১৮. যে ব্যক্তি সকাল ও সন্ধ্যায় সাতবার নিম্নের দোয়াটি পড়বে তার যাবতীয় বিপদাপদে আল্লাহই যথেষ্ট হবেন।
“হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আযীম”
পরিশেষে বলা যায় উপরোক্ত দোয়া গুলো আমরা প্রতিদিন সকালে সন্ধ্যায় নিয়ম করে পড়ে আল্লাহর সেবা গ্রহণ করব এবং অশেষ ছোয়াব হাসিল করব।
আরো বিস্তারিত তথ্য ও সকল আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজটি ফলো করুন।