Uncategorized

কর্ণফুলী টানেল কবে চালু হবে? কর্ণফুলী টানেল চালু হওয়ার তারিখ

কর্ণফুলী নদীর দুইপাড়ে চীনের সাংহাইয়ের আদলে “ওয়ান সিটি টু টাউন” গড়ে তুলতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ নামে টানেল নির্মাণ করা হচেছ। এই টানেলের নাম দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেল বা বঙ্গবন্ধু সুড়ঙ্গ। এটি বাংলাদেশের প্রথম টানেল বা সুড়ঙ্গ। এই টানেলের মধ্য দিয়ে ঢাকা -চট্টগ্রাম – কক্সবাজার সড়ক পথ যুক্ত হবে। দেশের প্রথম নদীর তলদেশে নির্মিত এই টানেল, কক্সবাজারের সাথে চট্টগ্রামের দূরত্ব কমাবে, পাশাপাশি সড়ক পথের যানজট ও দূষণ কমাতে সাহায্য করবে। দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন করতে বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার কর্ণফুলী নদীতে এই টানেল প্রকল্প গ্রহণ করেছেন ।

কর্ণফুলী টানেল

২০১৪ সালে টানেল প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সরকারি পর্যায়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়।  চীন সরকার এ টানেল নির্মাণের জন্য মনোনীত করেন চীনা প্রতিষ্ঠান ‘চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি) লিমিটেডকে’। বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটির প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। অনুমোদনের দুই বছর পরে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। তখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে ব্যয় একদফা বাড়িয়ে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ধরা হয়।

১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার অর্থ সহায়তা দিচ্ছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা আর প্রকল্পের বাকি ৫ হাজার ৯১৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা সহায়তা দিচ্ছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। যা ২ শতাংশ সুদহারে পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে।

কর্ণফুলী টানেলের দৈর্ঘ্য

টানেলের মোট দৈর্ঘ্য ৯ .৩৯ কিলোমিটার  হলেও মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩. ৩২ কিলোমিটার। টানেলে থাকবে ১০. ৮০ মিটার ব্যাসের দুটি টিউব, যাদের প্রতিটি দৈর্ঘ্য ২. ৪৫ কিলোমিটার।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে দুই টিউববিশিষ্ট বহু লেনের কর্ণফুলী টানেল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের এ টানেল সংযুক্ত করবে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা ও দক্ষিণের আনোয়ারা প্রান্তকে। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি টানেলের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রকল্পটির মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৩২ কিলোমিটার। টানেলের প্রতিটি টিউবের দৈর্ঘ্য ২. ৪৫ কিলোমিটার এবং ব্যাস ১০. ৮০ মিটার। প্রতিটি টিউবে দুটি করে মোট চারটি লেন থাকবে। মূল টানেলের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্ব প্রান্তে মোট ৫. ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক থাকবে। আর সাথে রয়েছে ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ওভারব্রিজ।

প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ মনজুর হোসেন বলেন, নকশা অনুযায়ী প্রকল্পটির কাজ দ্রুত চলছে। প্রকল্পটির  সার্বিক সর্বশেষ  অগ্রগতি হয়েছে ৭৪. ৩০ শতাংশ। প্রকল্পের সর্বশেষ আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৬৭. ৮৫ শতাংশ।
নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হয়ে যাবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

কর্ণফুলী টানেলের উপকারিতা

বর্তমানে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ৩৮২.০৮ একর জমির মধ্যে অধিগ্রহণ করা হয়েছে ৩৬২. ৩২ একর জমি। বাকি জমি দ্রুত অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। টানেল চালুর প্রথম বছরেই প্রায় ৫০ লাখ গাড়ি এই টানেলে যাতায়াত করবে বলে আশা করছেন কর্তৃপক্ষ।

কর্ণফুলী টানেল চালু হলে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে চট্টগ্রামের দুই অংশের মানুষের। বৃদ্ধি পাবে বাংলাদেশের জিডিপির পরিমাণ। ফলে বাংলাদেশের  চট্টগ্রাম শহর হয়ে উঠবে চীনের সাংহাইয়ের আদলে “ওয়ান সিটি টু টাউন”।

Related Articles