Information

ঢাকা মেট্রো রেলের ভাড়া কত? দেখে নিন এক ঝলকে – Dhaka metro rail fee

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে বাংলাদেশ সরকার খুব শীগ্রই ঢাকা শহরকে কেন্দ্র করে ঢাকা মেট্রো রেল ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে। ঢাকা মেট্রো রেল মূলত

ঢাকা মেট্রো রেল বাংলাদেশ

Tags: ঢাকা মেট্রো রেল বাংলাদেশ, ঢাকা মেট্রো রেলের ভাড়া, Dhaka metro rail Bangladesh, Dhaka metro rail fee

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে বাংলাদেশ সরকার খুব শীগ্রই ঢাকা শহরকে কেন্দ্র করে ঢাকা মেট্রো রেল ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে। ঢাকা মেট্রো রেল মূলত Mash Rapid Trangit বা MRT নামকরণ করা হয়েছে। ঢাকা শহরের ক্রবর্ধমান ট্রাফিক জ্যাম, যানবাহনের সমস্যা, পথের ভোগান্তি নিরসনের জন্য ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রথম বারের মতো ঢাকা মেট্রো রেল সেবা চালুর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।

ইউটিউব থেকে টাকা আয় করা যায় কিভাবে? ২০২২ সালে YOUTUBE থেকে টাকা আয় করার নিয়ম জেনে নিন

প্রথমে ২০১৩ সালে ৩টি মেট্রো লাইন করার পরিকল্পনা করা হয়। যা পরবর্তীতে ২০১৬ সালে প্রণীত সংশোধিত পরিবহন পরিকল্পনা অনুসারে ৩টির পরিবর্তে ৫টি লাইন করা হয়। প্রথমে ঢাকার উত্তরা হতে মতিঝিল পর্যন্ত দীর্ঘ ২০.১ কিমি MRT লাইন ৬ নির্বাচন করা হয়েছে। ২৬ জুন ২০১৬ তারিখে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে MRT লাইন ৬ এর শুভ উদ্বোধন করা হয় এবং নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়।

ঢাকা মেট্রো রেলের প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য

১৮ ডিসেম্বর ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক Mash Rapid Trangit development এর আওতায় ঢাকা মেট্রো রেল প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে দীর্ঘ ২০.১ কিমি পথ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। উক্ত পরিকল্পনার নাম দেয়া হয় MRT-৬। ঢাকা মেট্রো রেলের প্রকল্পের মোট বাজেট ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ধরা হয়। এর মধ্যে জাইকা ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে দিবে। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুসারে ঢাকার উত্তরা হতে মতিঝিল পর্যন্ত ঢাকা মেট্রো রেলের দুই লাইন দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে।

নতুন এনআইডি কার্ডের আবেদন পদ্ধতি। service.nidw.gov.bd

MRT-6 এর চূড়ান্ত রুট অ্যালাইনমেন্ট গুলো হলো উত্তরা তৃতীয় ধাপ হতে পল্লবী ও রোকেয়া সরণির পশ্চিম পাশ দিয়ে (চন্দ্রিমা উদ্যান ও সংসদ ভবন), খামারবাড়ী থেকে ফার্মগেট, সোনারগাঁও হোটেল,শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর, তোপখানা রোড হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত হবে। ঢাকা মেট্রো রেলের রুটের মোট ১৬টি স্টেশন করা হচ্ছে।

ঢাকা মেট্রো রেলের রুট গুলো হলো

১.উত্তরা উত্তর

২.উত্তরা সেন্টার

৩.উত্তরা দক্ষিণ

৪. পল্লবী

৫.মিরপুর ১১

৬. মিরপুর ১০

৭. কাজীপাড়া

৮. শেওড়াপাড়া

৯.আগারগাঁও

১০.বিজয় সরণি

১১. ফার্মগেট

১২. কারওয়ান বাজার

১৩. শাহবাগ

১৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

১৫.সচিবালয় এবং সর্বশেষ

১৬.মতিঝিল ও কমলাপুর।

ঢাকা মেট্রো রেলের বিদ্যুত ব্যাবস্থা

 ট্রেন চালানোর জন্য প্রতি ঘণ্টায় ১৩.৪৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হবে। এই বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিড থেকে নেয়া হবে। এর জন্য উত্তরা, পল্লবী, তালতলা, সোনারগাঁ ও বাংলা একাডেমি এলাকায় পাঁচটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।

ঢাকা মেট্রো রেলের নির্মাণ কাজ সমূহ

বর্তমান প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ জুন ২০১৬ সালে ঢাকা মেট্রো রেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

২ আগষ্ট ২০১৭ সালে MRT-6 এর উড়াল পথ ও স্টেশন এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২ আগষ্ট ২০১৭ সালে ঢাকার উত্তরা হতে আগারগাঁও পর্যন্ত ১২ কিমি পথের কাজ ও স্টেশন এর নির্মাণ কাজ আরম্ভ হয়। ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আগারগাঁও হতে মতিঝিল পর্যন্ত উড়াল পথ ও স্টেশনের কাজ আরম্ভ করা হয়। ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ সালে উক্ত প্রকল্পের উদ্বোধন তারিখ নির্ধারণ করা হয় কিন্তু জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় তারিখ পেছানো হয়েছে। ঢাকা মেট্রো রেলের পূর্ণ কাজ ডিসেম্বর ২০২৫ এর শেষে হবার কথা রয়েছে। MRT-1 ও MRT -5 এর কাজ ১৫ অক্টোবর ২০১৯ সালে শুরু করা হয়।

MRT-1 প্রকল্পের আওতায় বিমানবন্দর হতে কমলাপুর পর্যন্ত এবং নতুনবাজার হতে পূর্বাচল পর্যন্ত মোট ৩১.২৪ কিমি পথে মেট্রোরেল নির্মাণ করা হবে। উক্ত প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। যার মধ্যে জাপান সরকার ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা দিবে এবং বাকি ১৩ হাজার ১১১ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে দেয়া হবে।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত উক্তি সমূহ ,বাণী সমূহ

MRT-1 প্রকল্পে বিমানবন্দর হতে কমলাপুর পর্যন্ত ১৬.২১ কিমি পথ হবে পাতাল পথে এবং কুড়িল হতে পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত ১১.৩৬ কিমি পথ হবে উড়ালপথে। নতুন বাজার হতে কুড়িল পর্যন্ত ৩.৬৫ কিমি পথে আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রানজিশন লাইনসহ ৩১.২৪ কিমি রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এই মেট্রোরেলের মোট ১২টি স্টেশন থাকবে মাটির নিচে এবং ৭টি স্টেশন হবে উড়াল সেতুর ওপর দিয়ে।

ঢাকা মেট্রো রেলের ভাড়া তালিকা

সব কিছু ঠিক থাকলে এই বছরের ডিসেম্বরে উত্তরা হতে আগারগাঁও পর্যন্ত ঢাকা মেট্রো রেল চালু হতে পারে। DTCA ঢাকা মেট্রো রেলের ভাড়া তালিকা প্রকাশ করেছে। ঢাকা মেট্রো রেলের ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ৫ টাকা ধরা হয়েছে।

আগামী ডিসেম্বরে ঢাকা মেট্রোরেল প্রথম পর্যায়ে যে অংশে চলাচল শুরু করবে সেই উত্তরা নর্থ স্টেশন যা  দিয়াবাড়িতে অবস্থিত সেই স্থান হতে আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ টাকা। এর মাঝে মেট্রোরেলের আরও ৭টি স্টেশন আছে। উত্তরা নর্থ স্টেশন হতে উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা সাউথ স্টেশনের ভাড়া একই ধরা হয়েছে এবং ভাড়া হলো ২০ টাকা। এ ছাড়া প্রথম স্টেশন উত্তরা নর্থ হতে পল্লবী ও মিরপুর-১১ স্টেশনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা। মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ টাকা। শেওড়াপাড়া স্টেশনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা।

ঢাকা মেট্রো রেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা ধরা হয়েছে এবং সর্বোচ্চ ভাড়া ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রো রেলের ভাড়া

ঢাকা মেট্রো রেলে পল্লবী স্টেশন হতে মিরপুর-১১ স্টেশন, মিরপুর-১০ এবং কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পল্লবী স্টেশন হতে শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মিরপুর-১০ নম্বর হতে ফার্মগেট পর্যন্ত ৩০ টাকা এবং কারওয়ান বাজার স্টেশনের ভাড়া ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মিরপুর ১০ স্টেশন হতে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ভাড়া ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মিরপুর ১০ থেকে সচিবালয় এবং মতিঝিল স্টেশনে ৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রো রেলের ভাড়া কত

কমলাপুর স্টেশনে যেতে বাড়তি ১০ টাকা অর্থাৎ ৭০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। কমলাপুর স্টেশন হতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মাঝখানে যে ২টি স্টেশন মতিঝিল এবং সচিবালয়ের ভাড়া ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কমলাপুর স্টেশন হতে শাহবাগ এবং কারওয়ান বাজারের ভাড়া ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ফার্মগেট ৪০ টাকা ভাড়া, বিজয় সরণি এবং আগারগাঁও ৫০ টাকা ভাড়া, শেওড়াপাড়া ৬০ টাকা ভাড়া, কাজীপাড়া এবং মিরপুর ১০ স্টেশনের ৭০ টাকা ভাড়া, মিরপুর১১ এবং পল্লবী ৮০ টাকা ভাড়া, উত্তরা সাউথ স্টেশনের ৯০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোরেলের ভাড়াটিয়া স্মার্ট কার্ড তারা পরিশোধ করা হয় তবে ভাড়াতে ১০% ছাড় প্রদান করা হবে।

ডিএমটিসিএল (DMTCL) কোম্পানি জানিয়েছে মেট্রোরেলে চলাচল করতে সেবা গ্রহণকারীকে সাপ্তাহিক/মাসিক/পারিবারিক কার্ড কিনতে হবে। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে থাকা মেশিন হতেও স্মার্ট কার্ড রিচার্জ করার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া প্রতি যাত্রার ক্ষেত্রে স্মার্ট কার্ড না থাকলে যাত্রীদের সময়কার প্রদান করা হবে যা স্মার্ট কার্ডের মতই ব্যবহার করা যাবে। কেউ যদি প্রদানকারী ভাড়ার অতিরিক্ত যাত্রা করে তবে স্মার্ট কার্ড দ্বারা দরজা খুলবে না। তখন দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার কাছে অতিরিক্ত ভাড়া প্রদান করতে হবে। ঢাকা মেট্রো রেলের স্টেশনগুলোতে প্রবেশের সময় যাত্রীদেরকে স্মার্ট কার্ড পান্চ করতে হবে অন্যথায় দরজা খুলবে না।

ঢাকা মেট্রোরেলের যাত্রা সময়

ঢাকা মেট্রোরেল ভোর হতে রাত ১২টা পর্যন্ত চলাচল করবে। ঢাকা মেট্রোরেলের যাত্রা দুই দিক হতেই একই সাথে শুরু হবে। ঢাকা মেট্রো রেলের যাত্রা শুরুর প্রথম দিকে ৪ লক্ষ ৮৩ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। পরবর্তীতে ঢাকা মেট্রো রেল সেবা আরো বাড়ানো হবে। তখন আরো বেশি যাত্রী ঢাকা মেট্রোরেলের সেবা নিতে পারবে এবং যাতায়াত করতে পারবেন।

Related Articles