Information

জেফ বেজস এর জীবনী

আজকে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি পৃথিবীর তৃতীয় শীর্ষ ধনী ব্যাক্তি জেফ বেজস এর সম্পর্কে। তার লাইফ স্টাইল, তার বায়োগ্রাফি, তার সফলতা, তার ব্যার্থতা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমরা উক্ত পোস্টে আলোচনা করেছি।

জেফ বেজস এর জীবনী

প্রিয় পাঠকবৃন্দ কেমন আছেন সবাই। আশা করি সকলে অনেক ভালো আছেন। আজকে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি পৃথিবীর তৃতীয় শীর্ষ ধনী ব্যাক্তি জেফ বেজস এর সম্পর্কে। কে তিনি? কি তার পরিচয়? তার লাইফ স্টাইল, তার বায়োগ্রাফি, তার সফলতা, তার ব্যার্থতা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আমরা উক্ত পোস্টে আলোচনা করেছি। জেফ বেজস এর জীবনী

জেফ বেজস কে?

Biography of Jeff Bezos 1

জেফ বেজস হলেন ২০২৩ সালের শীর্ষ ১০ জন ধনী ব্যাক্তিদের মধ্যে একজন। বর্তমানে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় তিনি তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছেন। বর্তমানে তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১২৫.৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার। তাকে আমেরিকার একজন সফল বিজনেস ম্যান হিসেবে ধরা হয়।

Bdix কী বাড়িয়ে নিন আপনার WiFi স্পীড

জেফ বেজস এর বায়োগ্রাফি

নাম জেফরি প্রেস্টন জেফ বেজোস।
জন্ম ১২ জানুয়ারি ১৯৬৪।
বয়স ৫৯ বছর।
জাতীয়তা আমেরিকান।
পিতার নাম মিগুয়েল বেজস।
মাতার নাম জ্যাকলিন বেজস।
পেশা amazon.com এর চেয়ারম্যান এবং সিইও।
উপাধি amazon.com এর সিইও।
বার্ষিক আয় ১২৫.৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার।

Biography-of-Jeff-Bezos-2

জেফ বেজস এর শৈশবের ইতিহাস

Biography-of-Jeff-Bezos-3

জেফ বেজস ১৯৬৪ সালে ১২ই জানুয়ারি আমেরিকায় জন্ম গ্রহণ করেন। জেফ বেজস এর জন্মের সময় তার মায়ের বয়স ১৭ বছরের কম ছিল। জেফ বেজস এর বয়স যখন চার বছর তখন তার মা ও পিতা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ছোটবেলা থেকে তিনি খুবই কৌতুহলী ও মেধাবী ছিলেন। খুব অল্প বয়সে তিনি তাদের গ্যারেজ কে ছোটখাটো একটি ল্যাবরেটরীতে পরিণত করেছিলেন। বিভিন্ন প্রকারের যন্ত্রপাতি তার ল্যাবরেটরীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতো। তাদের পিতা মাতার বিবাহের কিছুদিন পরেই তারা মায়ামিতে শিফট করেন। তিনি তার প্রথম ব্যবসা হাই স্কুল জীবনে শুরু করেন।

বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী ব্যাক্তির তালিকা ২০২৩

জেফ বেজস এর ছাত্র জীবন ও তার পরবর্তী সময়

১৯৮৬ সালে সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিষয়ে খুব ভালো ফলাফল করেন তিনি। ইউনিভার্সিটি থেকে বের হওয়ার পর ওয়াল স্ট্রিটের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। এরমধ্যে রয়েছে ফিটেল, D.E.Shaw এর মত উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান। D.E.Shaw তে কাজ করার সময় তিনি তার জীবনের প্রথম সাফল্য পান। ১৯৯০ সালে উক্ত প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে তরুণ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি পদোন্নতি লাভ করে। উক্ত প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সময় তিনি তার লাইফ পার্টনার মাকেনজির সাথে পরিচিত হন।

জেফ বেজস এর ই-কমার্সে প্রবেশ

উক্ত সময় ফিনান্সিংয়ে সাফল্য অর্জনের পর তিনি ই-কমার্স এ বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ১৯৯৪ সালে তিনি তার চাকরি থেকে রিজাইন দেন। এরপর তিনি সিয়াটলে শিফট হন। উক্ত স্থানে শিফট হওয়ার পর একটি অনলাইন বুক শপ ওপেন করে ইন্টারনেট মার্কেটিং এর জগতে প্রথম প্রবেশ করেন। উল্লেখ্য যে, উক্ত সময়ে ইন্টারনেট মার্কেটিং খুব বেশি একটি প্রচলিত বিষয় ছিল না। এরপরেও তিনি ই-কমার্সে বিনিয়োগ করার ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

জেফ বেজস এর Amazon.com প্রতিষ্ঠার ইতিহাস

Biography-of-Jeff-Bezos-4

জেফ বেজস ও তার অল্প কয়েকজন কর্মী মিলে নতুন কোম্পানি সফটওয়্যার তৈরি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এর কিছুদিন পর তারা একটি পরীক্ষামূলক ওয়েবসাইট ওপেন করেন। তিনি ও তার কিছু বন্ধু মিলে ১৬ই জুলাই ১৯৯৫ সালে বেটা টেস্টিং হিসেবে তার উক্ত সাইটটি উদ্বোধন করেন। উক্ত সাইটটির নাম রাখেন অ্যামাজন। উক্ত সাইটটির নাম দক্ষিণ আমেরিকার বহু শাখা বিশিষ্ট নদী আমাজনের নাম থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে রাখা। Amazon.com জেফ বেজস এর আশার থেকেও বেশি সাফল্য অর্জন করেছিল। কোন প্রকার বিজ্ঞাপন ছাড়াই এক মাসে তাদের আমাজন সাইটটি আমেরিকার সহ মোট ৫০টি দেশে বই বিক্রি করতে সক্ষম হয়। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে তাদের সাইটে বিক্রয়ের পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। অবশেষে ১৯৯৭ সালে আমাজন সাইটের বেটা টেস্টিং বন্ধ করে সাইটটি পুরোপুরি চালু করেন।

Top 10 places in Bangladesh

আমাজন সাইটের পরবর্তী ধাপ

পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে জেফ বেজস তার সাইটে বই বিক্রির পাশাপাশি সিডি ও ভিডিও ক্যাসেট বিক্রি শুরু করেন। উক্ত বিষয়ে সাফল্য লাভের পর বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সাথে তিনি চুক্তি বদ্ধ হন। এরপর তিনি তার সাইটে বিভিন্ন প্রকার ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি, পোশাক, খেলনা বিক্রি শুরু করেন। আমাজন.কম প্রতিষ্ঠার ১০ বছর পর তার সাইটের মূল্য ১৭০ কোটি মার্কিন ডলার হয়। এখন পর্যন্ত তার সাইটের মূল্য বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় আছে। ২০০৬ সালে এসে জেফ বেজস পণ্য বিক্রয়ের পাশাপাশি নতুন একটি ভিডিও সার্ভিস ‘ভিডিও অন ডিমান্ড’ চালু করেন। যার প্রথম নাম রাখা হয়েছিল আমাজন আনবক্স। তবে পরবর্তীতে সাফল্য অর্জনের পর উক্ত সেবাটির নাম পরিবর্তন করে অ্যামাজন ইনস্ট্যান্ট ভিডিও রাখা হয়। ২০০৭ সালে জেফ বেজস Kindle নামে বই পড়ার ডিজিটাল মাধ্যমে তৈরি করেন। উক্ত সেবাতে বই কেনার পাশাপাশি ডাউনলোড ও জমা রাখার সুবিধা দেয়া হয়।

জেফ বেজস এর মহাকাশ ভ্রমণ সেবার পরিকল্পনা

Biography-of-Jeff-Bezos-5


২০০৭ সালে জেফ বেজস Blue Origin নামক পরিকল্পনায় বিনিয়োগের ঘোষণা দেন। ব্লু অরিজিন এর পরিকল্পনা হল অর্থের বিনিময়ে গ্রাহকদের মহাকাশ ভ্রমণের সুযোগ প্রদান করা।

জেফ বেজস এর ওয়াশিংটন পোস্ট ক্রয়

৫ আগস্ট ২০১৩ সালে জেফ বেজস ২৫ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ওয়াশিংটন পোস্টের সকল পাবলিকেশন কিনে নেন। এ সময় পৃথিবীর প্রায় সবগুলো বড় নিউজ এজেন্সির খবরে তার নাম চলে আসে।

আমাজন প্রাইমের সূচনা

Biography-of-Jeff-Bezos-6

ডিসেম্বরের ২০১৩ সালে জেফ বেজস আরো একটি প্রকল্পের ঘোষণা দেন। উক্ত প্রকল্পটির নাম তিনি অ্যামাজন প্রাইম এয়ার রাখেন। উক্ত পরিকল্পনাটির উদ্দেশ্য ছিল রিমোট কন্ট্রোল চালিত ড্রোন এর সাহায্যে প্রিমিয়াম ক্রেতাদের কাছে পণ্য পৌঁছে দেওয়া।

আমাজন স্টুডিওর সূচনা

২০১০ সালে জেফ বেজস সর্বপ্রথম আমাজন স্টুডিওস এর যাত্রা শুরু করেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে মোজারট ইন দা জঙ্গল, ট্রান্সপারেন্ট নামে দুইটি হিট শো নির্মাণ করে। ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া স্টার ট্রেক বিয়ন্ড নামে সিনেমায় তিনি অভিনয়ও করেন। মজার বিষয় হলো বাল্যকাল থেকেই তিনি স্টার ট্রেকের অনেক বড় ভক্ত।

জেফ বেজস এর ব্যর্থতা সমূহ

জেফ বেজস একজন সফল ব্যবসায়ী হলেও আরো কিছু ব্যর্থতার ইতিহাস রয়েছে। যার মধ্যে তার বড় একটি ব্যর্থতা হল ফায়ার ফোন। ফায়ারফোন নামের মোবাইলটি তিনি ২০১৪ সালে মার্কেটে আনেন। মোবাইল ফোনটির জটিল ইন্টারফেসের কারণে ফায়ারফোন মোবাইল থেকে তিনি সাফল্য অর্জন করতে পারেননি। যার ফলে উক্ত ফোনটির আর কোনো ভার্সন মার্কেটে দেখা যায় নি।

Top popular foods in the world

জেফ বেজস এর অজানা কিছু তথ্য

জেফ বেজস অজানা কিছু তথ্য গুলো হলো,

১. জেফ বেজস এর জন্মের সময় তার মায়ের বিষয় মাত্র ১৭ বছর ছিল।
২. জেফ বেজস এর জন্মের সময় তার মা জুনিয়র হাই স্কুলের একজন স্টুডেন্ট ছিলেন।
৩. তার মা দুই বার বিয়ে করেন।
৪. তার বায়োলজিকাল পিতার নাম টেড জর্জসেন।
৫. জেফ বেজস এর জন্মের মাত্র ১ বছর পর তার পিতা মাতার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
৬. তার দ্বিতীয় পিতা একজন কিউবার নাগরিক।
৭. তার বায়োলজিকাল অর্থাৎ প্রথম পিতা একজন সার্কাস দলের সদস্য ছিলেন।
৮. ছোটবেলা থেকেই তিনি খুব মেধাবী ও কৌতুহলী।
৯. হাই স্কুল লাইফে তিনি তার নিজস্ব একটি গ্যারেজ ল্যাবরেটরি তৈরি করেন।
১০. ব্র্যান্ড স্টোন জেফ বেজস এর ওপর একটি জীবনী লিখেছেন।
১১. ১ লক্ষ ডলার দিয়ে তিনি তার ই কমার্স ব্যাবসা শুরু করেন।
১২. মাত্র ৫ বছরের মধ্যে তার প্রতিষ্ঠান amazon.com এর গ্রাহক সংখ্যা ১ কোটি ১০ লক্ষে পৌঁছায়।
১৩. ৩৫ বছর বয়সে তিনি শীর্ষ ধনীদের তালিকায় তার নাম লিখিয়েছেন।
১৪. তার কোম্পানি আমাজনে প্রায় ৫ লক্ষ ৭৫ হাজার কর্মী কাজ করেন। যা ইউরোপের দেশ লুক্সেমবার্গ এর জনসংখ্যার সমান।
১৫. জেফ বেজস স্টার ট্রেক সিরিজের একজন বড় ভক্ত।

আরো বিস্তারিত তথ্য ও সকল আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজটি ফলো করুন।

Our official Facebook page

EDUINFOBD OFFICIAL

Related Articles